জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলা ও ক্ষুদ্র দ্বীপদেশগুলোর উন্নয়নে জোর আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র এন্টিগা এণ্ড বারবুডার রাজধানী সেন্ট জনসে স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার দুপুরে জাতিসংঘ আয়োজিত ‘ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের চতুর্থ সম্মেলনে’র দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্বকারী ড. হাছান মাহমুদ বক্তৃতায় এই আহবান জানান। সেন্ট জনসের ‘আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব এন্টিগা’র প্রধান মিলনায়তনে সিডস সম্মেলনের প্লেনারি অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ঐতিহ্যবাহী মুখপাত্র হিসেবে এবং ক্ষুদ্র দ্বীপদেশগুলোর উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে উচ্চকন্ঠ বাংলাদেশের ভূমিকা উল্লেখ করতে গিয়ে এইসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দুই মেয়াদে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সংগঠন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, সমুদ্রের অম্লতাবৃদ্ধি এবং চরম আবহাওয়ার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় বিশেষ দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ড. হাছান বলেন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে উচ্চ কার্বন নিঃসরণকারী উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোকে জবাবদিহিমূলক প্রতিশ্রুতির আওতায় আনা একান্ত প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে আজারবাইজানের বাকুতে আসন্ন বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯ এ ২০২৫ সাল পরবর্তী সময়ে জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং জলবায়ু ঝুঁকির অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধির দিকে জাতিসংঘ সদস্যদের মনোযোগী হওয়া জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর চ্যালেজ্ঞ মোকাবেলায় রাষ্ট্রগুলোর দায়িত্ব সম্পর্কে আন্তর্জাতিক আদালতের (আইসিজে) কাছ থেকে পরামর্শমূলক মতামত চাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্বের কথাও তুলে ধরেন। আফ্রিকার স্বল্পোন্নত এবং ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় সিডস দেশগুলোর ক্যাডেটদের জন্য বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে বৃত্তি প্রদানের কথা জানিয়ে সম্মেলনে ড. হাছান বলেন, সামুদ্রিক খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং আন্ত:জাতি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সম্মেলন শেষে ‘দ্য এন্টিগা এণ্ড বারবুডা এজেন্ডা ফর সিডস (আবাস)’ প্রতিরোধে সক্ষম উন্নয়নের লক্ষ্যে নবায়নকৃত ঘোষণাপত্রটি চূড়ান্ত হবে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অণুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ দেশের প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। এই দিন সিডস সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি জ্যামাইকা এবং ডোমিনিকান রিপাবলিকের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। হাছান মাহমুদের সাথে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্টো আলভারেজ এবং জ্যামাইকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামিনা জনসন স্মিথের বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে সহযোগিতা, মানুষে মানুষে যোগাযোগ, সংস্কৃতি, শিল্প, শিক্ষা, বাণিজ্য এবং পর্যটনে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পায়। পাশাপাশি এই দিন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধি বব রে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনায় বব রে রোহিঙ্গা সংকট নিরসন নিয়ে কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে জানান, নিজ দেশ থেকে উদ্বাস্তু হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়াই একমাত্র সমাধান।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলা আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
- আপলোড সময় : ৩০-০৫-২০২৪ ১২:১৭:৩০ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ৩০-০৫-২০২৪ ১২:১৭:৩০ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ